Published - 22/07/19
Update_1 - 010819
ধর্মীয় মতবাদ অনুযায়ী বিভিন্ন জাতি-প্রজাতির প্রাণ পৃথিবীতে চোখ মেলেছিল ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বীচিত্রতায় | যে পৃথিবী তাঁরই সৃষ্ট অসীম বৈচিত্রময় মহাজগতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ |
একই অঙ্গে কত রূপ, পৃথিবী এই বৈচিত্র্য নিয়েই বহমান আজ অবধি যেখানে রয়েছে নানা প্রজাতির উদ্ভিদরাজি, প্রাণিকুল ও বস্তু এবং শক্তি | এর মাঝেই মানব প্রজাতিও নানা ভাষাভাষী, ধর্ম, বর্ণ নিয়ে ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্যকে প্রকাশিত করছে | মানুষ ঈশ্বরের এই সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্য দেখে মুগ্ধ হয়, মুগ্ধ হয় আকাশের তারা থেকে ফেনীল সমুদ্র্রের অদ্ভুত রূপ দেখে, মুগ্ধ হয় বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের আশ্চর্য বৈচিত্র্যময় কৃষ্টি-কালচার দেখে | কিন্তু কখনো কখনো স্বার্থান্নেষী মহলের স্বার্থের তোড়ে এই মুগ্ধতা হিংস্রতায় রূপ নেয়...মানুষ ভুলে যায়, একই অনাদি উৎস থেকে তাদের আগমন, ভুলে যায় ধর্মের মহান বাণী, মানবিক মূল্যবোধ আর ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্যকে চ্যালেঞ্জ করে বসে! তাই উপমহাদেশে ১৯৪৭ আসে, আসে ৭১ বা পাকিস্তানিদের ভাষায় ___উনদের গন্ডগোল, আসে বাবরি মসজিদ, আসে জয় শ্রী রাম |পৃথিবীর অন্নান্য দেশেও আসে নির্মম সাম্প্রদায়িকতা | প্রতিটি ধর্মই দাবি করে, অনাদি উৎস তাদের থেকেই শুরু হয়েছে, আর তারপর বহুধা ধর্মীয় বিভক্তি ঘটেছে | তাই একই অনাদি উৎস থেকে আগমনের কারণে এক ধর্মের অনুসারী যদি অন্য ধর্মের অনুসারীদের গালিগালাজ বা নির্যাতন করে, তবে কি তারা নিজেদেরই বা নিজেদের আত্মজ কিংবা পূর্বপুরুষদের কেই সেই একই গালি দিচ্ছে না বা অত্যাচার করছে না কিংবা একই স্রষ্টার অপমান করছে না ?
এছাড়াও সব ধর্মই বিশ্বাস করে যে বেহেশতে ঢোকার আগে বিচারের মুখোমুখী হতে হবে আর যদি তাই হয় আপনি এখন যাদের সাথে অন্যায় করছেন, তাদের সাথেও তো আপনার সেখানে দেখা হবে এবং পৃথিবীতে আপনার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েও যারা ফল পান নি, তারা সেখানে নালিশ জানালে আপনার বেহেশতে প্রবেশের জন্য কি কিছুটা সমস্যা হবে? সে তখন দেখা যাবে বলে যারা অন্যায় করে চলেছেন আবার ধর্ম পালনকারীর সামাজিক তকমাও লাগিয়েছেন, কিংবা ভাবছেন ধর্ম পালনের মধ্যে দিয়ে আপনাদের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, তারা আসলেই মহান এবং মহাজ্ঞানী ! তাই এইসব মহাজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে নালিশকারীদেরও একত্রিত হয়ে মহাশক্তি নিয়োগ করা উচিত এই পৃথিবীতেই !!
সাম্প্রদায়িকতা অনেকাংশেই স্বার্থান্নেষী মহলের জায়গা-জমি বা দেশ দখল কিংবা ক্ষমতাধর কোনো রাষ্ট্রনেতা. ধর্মীয়নেতা বা নিতান্তই নেতা হবার লোভে ধৈর্যসহ দীর্ঘ আলোচনার পথে না গিয়ে তড়িঘড়ি অসচেতন মানুষদেরও কিছু পাবার লোভ দেখিয়ে এক অনন্ত কালো আঁধার তৈরী করা ছাড়া আর কিছুই নয় | পৃথিবীর ইতিহাসে এর উদাহরণ ভুড়ি ভুড়ি | তাই সাম্প্রদায়িকতা এইসব ব্যক্তি বা মহলের কাছে প্রিয়ও বটে! এই স্বার্থান্নেষী মহল দেশের বাইরের কোনো শক্তিও হতে পারে যারা দেশের ভেতরের স্বার্থান্নেষী মহলের মাদ্ধমে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে | যে কোনো দেশে সংখ্যালঘুরা এদেরই টার্গেট হয়ে থাকে এবং প্রতিটি দেশে এদের দ্বারাই তাঁরা নির্যাতিত হয়ে থাকে | শুধু সংখ্যালঘুই বা বলি কেন, সমাজে যারা দুর্বল, তারাও এই নির্যাতন ভোগ করে থাকে | কোনো দেশের ভবিষ্যত অবস্থা আঁচ করে অনেকেই দেশত্যাগ করতে পারে, করেও | দেশের অনেক মেধাবী ছাত্রও তাই বিদেশে পাড়ি জমায়,সংখ্যালঘুরাও অন্য দেশে তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করে | এখন কোনো দেশের সৎ সরকার ও সংখ্যাগুরুর সৎ ও উদার অংশ এগুলোকে আমলে এনে সুষ্ঠ ব্যবস্থাদি নেবেন | এসব ব্যবস্থা না নেবার ফলেই, সার্থান্নেষী মহলের চাপে পড়ে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র তার বর্ণ হারায় |
প্রিয়া সাহা যে বিভাজন করেছেন সে ব্যাপারে আমরা একমত কিন্তু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কি মুসলিম সহ অন্নান্য ধর্মের সাথে বিভেদ তৈরী করছে না? এছাড়া এটা তো বোকামি বলেও মনে হয় কেননা সংখ্যাগুরুদের প্রগতিশীল অংশকে সাথে রাখলে তো দাবি আদায়ে সুবিধাই হতো আর গো-মাংস ভক্ষণকারী ক্রিশ্চিয়ানরা যদি সাথে থাকতে পারে, মুসলিমরা নয় কেন | এছাড়াও ধর্মীয় দর্শন অনুযায়ী যদি সব মানুষ সমান হয় তবে অন্তত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে না হোক মানসিক ভাবে তো সবাই সবাইকে একাত্মা হিসেবেই দেখা উচিত | আর যদি তা না পারি তবে ধর্মকে বা ধর্মের সমস্ত মানবিক এবং শ্রেষ্ঠ দর্শনগুলো না আওড়ানোই ভালো | মুখে এক আর অন্তরে আর এক ভন্ডামীই প্রমান করে শুধু | এই উপমহাদেশ সহ পৃথিবীর ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে বিভেদ, বর্ণবাদ, সাময়িক ধর্মীয়-শ্রেষ্ঠত্ববাদ আর জাত পাতের ইতিহাস | ব্রাম্মন-ক্ষত্রিয়-শুদ্র কিংবা শিয়া-সুন্নি-কাদিয়ানী, ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট, ক্যাথলিক-প্রোটেস্ট্যান্ট, শ্রেষ্ঠত্বের দাবিতে যে কোনো ধর্মের বিপরীতে অন্য ধর্মের তুলনা ইত্যাদি তাই প্রমান করে | ঈশ্বরের বৈচিত্রপ্রিয়তার মুগ্ধতা এখানে নেই আছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাস্প, নোংরা আঁধার | প্রকৃত উদার ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষেরা এসব নোংরা আঁধার দূরে রাখেন, তাঁরা হন প্রদোষে- প্রাকৃতজন, চোখে শুভ্রতা নিয়ে দিগন্তে হেঁটে যান |
.......সময় অনেক গেছে, এখন আমাদের দার্শনিক পরিপক্কতা দরকার | এসব বিষয় সমাজের সচেতন ও উদার প্রগতিশীল মানুষেরা জানে ও পালনও করেন কিন্তু সমগ্র জনগোষ্ঠীকে এই বিষয়ে শিক্ষিত করতে না পারলে ১৯৪৭ বা ৭১ বারবার আসবে | এই শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্ব সরকার সহ জনকল্যাণকামী সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও ধর্মীয় দলসমূহের | শুধু ধর্মীয় উদারনৈতিকতারই শিক্ষা নয়, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টিকারী স্বার্থান্নেষী মহল সম্পর্কে তাদের সজাগ করা ও প্রতিহত করা যে কোনো সরকারের সৎ অংশ এবং রাজনৈতিক দলের সৎ অংশের কিংবা প্রকৃত জনকল্ল্যাণমুখী সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলির দায়িত্ব | কেননা আম-জনতা এবং সৎ সরকারের সবাই শান্তিপ্রিয় এবং উদার, শুধুমাত্র কিছুসংখক লোভী ভূমিদস্যুর কারণে অশান্ত হয়ে ওঠে দেশ, জাতি, সমাজ | এই ভূমিদস্যুরা শুধু সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগুরুর "দুর্বল সংখ্যাগুরুদের" জায়গা-জমিও হরণ করে বৈকি | বোধকরি, এ ব্যাপারে উদাহরণ দেবার প্রয়োজন নেই! এইসব ভূমিদস্যু, সরকারের অসৎ অংশের যোগসাজশে মিথ্যা কাগজপত্র তৈরির মাদ্ধমে জায়গা-জমি গিলে খায় | তাই অনেকসময়ই আপনি ধরতে পারবেন না, কোথা থেকে কি হলো !!
তাই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সহ অন্নান্য সমস্ত ধর্মের ধর্মীয় দলগুলিকে আহব্বান করবো, আসুন একসাথে চলি | সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর পরস্পরের প্রতি কৃত প্রকৃত সত্য অভিযোগ গুলি আমলে আনি ও আলোচনার মাদ্ধমে সমাধানে পৌঁছাই | আর মনে রাখতে হবে, পূর্বে উল্লিখিত কিছু সার্থান্নেষী মহলের কারণেই এসব অভিযোগ তৈরী হয় | বিভেদ সৃষ্টি না করে ঈশ্বরের বৈচিত্রপ্রিয়তা অনুভব করি কিন্তু একইসঙ্গে সবাইকে অন্তত মানসিক ভাবে ব্রাদার ভাবি | বৈচিত্র্য সঙ্গে নিয়েই যার যার ধর্ম পালন করি আর উৎসবে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলাই | আর যেহেতু তাঁর ইশারা ছাড়া একটি পাতাও নড়ে না, তাই এই বহুধা ধর্মীয় বিভক্তির বৈচিত্রতা তাঁর অঙ্গুলি হেলনেই হয়েছে।সুতরাং প্রতিটি ধর্মের ঈশ্বরের আরাধনার অদ্ভুত প্রশান্তিময় চিত্রগুলি আমাদের একাত্মতারই বহিঃপ্রকাশ বই কি !
আর একটি কথা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর কাছে নোবেল বিজয়ী কিন্তু ভয়ানক ভাবে নির্যাতিতা ইরাকী মুসলিম ইয়াজেদি নারী নাদিয়া মুরাদ এর বক্তব্য শুনুন এই লিংকে - https://tinyurl.com/y628lc44 | যেসব শিক্ষিত তরুণ কিংবা পেশাজীবীরা ISIS -কে ইসলামের জেহাদি কান্ডারি বলে মনে করছেন, তাঁরা হয়তো মত পাল্টাবেন ও অসচেতন নাগরিকদের এ ব্যাপারে সচেতন করবেন | ইয়াজিদি মুসলিমরাও কিন্তু সেখানে সংখ্যালঘু ! স্বীকার বা অস্বীকার যাই করা হোক, এটাই বাস্তবতা যে সংখ্যালঘুরা পৃথিবীর যে কোনো দেশেই কম-বেশী কিছু না কিছু বৈষম্যের স্বীকার কেননা মানুষের প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা ঢের বাকি !
ইদানিংকার ISIS কিংবা খ্রীষ্টান সুপ্রিমেসিস্ট আক্রমণ কিংবা জয় শ্রী রাম বা বার্মার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ধর্ম ও জাতীয়তার নামে অস্ত্রহীন নিরীহ মানুষদের ওপর যেসব অস্ত্র-সন্ত্রাস করছে বা করেছে তা নির্লজ্জ কাপুরুষতা যা কখনোই কাম্য হতে পারে না | যুদ্ধ হতে হবে সমানে সমান এবং সঠিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে | নিরীহ মানুষকে মেরে প্রতিশোধ নেওয়া বা দাবি আদায় বা বীরত্ব ফলানো , ঘৃণা ছড়ানো সবই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও দর্শন এবং নীতি-নৈতিকতার দিক থেকে অনন্ত পাপাচারের কাজ | আমাদের উচিত সকলে মিলে এসব প্রতিরোধ করা ও এদের বিরুদ্ধে কথা বলা কিংবা এদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা | আবারো সরকার ও সমাজের সচেতন অংশ ও ধর্মীয় দলগুলোকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলবো |
আরো দেখুন -: একটি "মহান প্রেমময় ভ্রাতৃত্বের বিশ্ব" তৈরি করার জন্য "বিশ্ব নেতাদের" প্রতি খোলা চিঠি
Update_1 - 010819
ধর্মীয় মতবাদ অনুযায়ী বিভিন্ন জাতি-প্রজাতির প্রাণ পৃথিবীতে চোখ মেলেছিল ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বীচিত্রতায় | যে পৃথিবী তাঁরই সৃষ্ট অসীম বৈচিত্রময় মহাজগতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ |
একই অঙ্গে কত রূপ, পৃথিবী এই বৈচিত্র্য নিয়েই বহমান আজ অবধি যেখানে রয়েছে নানা প্রজাতির উদ্ভিদরাজি, প্রাণিকুল ও বস্তু এবং শক্তি | এর মাঝেই মানব প্রজাতিও নানা ভাষাভাষী, ধর্ম, বর্ণ নিয়ে ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্যকে প্রকাশিত করছে | মানুষ ঈশ্বরের এই সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্য দেখে মুগ্ধ হয়, মুগ্ধ হয় আকাশের তারা থেকে ফেনীল সমুদ্র্রের অদ্ভুত রূপ দেখে, মুগ্ধ হয় বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের আশ্চর্য বৈচিত্র্যময় কৃষ্টি-কালচার দেখে | কিন্তু কখনো কখনো স্বার্থান্নেষী মহলের স্বার্থের তোড়ে এই মুগ্ধতা হিংস্রতায় রূপ নেয়...মানুষ ভুলে যায়, একই অনাদি উৎস থেকে তাদের আগমন, ভুলে যায় ধর্মের মহান বাণী, মানবিক মূল্যবোধ আর ঈশ্বরের সৃষ্টিশীল বৈচিত্র্যকে চ্যালেঞ্জ করে বসে! তাই উপমহাদেশে ১৯৪৭ আসে, আসে ৭১ বা পাকিস্তানিদের ভাষায় ___উনদের গন্ডগোল, আসে বাবরি মসজিদ, আসে জয় শ্রী রাম |পৃথিবীর অন্নান্য দেশেও আসে নির্মম সাম্প্রদায়িকতা | প্রতিটি ধর্মই দাবি করে, অনাদি উৎস তাদের থেকেই শুরু হয়েছে, আর তারপর বহুধা ধর্মীয় বিভক্তি ঘটেছে | তাই একই অনাদি উৎস থেকে আগমনের কারণে এক ধর্মের অনুসারী যদি অন্য ধর্মের অনুসারীদের গালিগালাজ বা নির্যাতন করে, তবে কি তারা নিজেদেরই বা নিজেদের আত্মজ কিংবা পূর্বপুরুষদের কেই সেই একই গালি দিচ্ছে না বা অত্যাচার করছে না কিংবা একই স্রষ্টার অপমান করছে না ?
এছাড়াও সব ধর্মই বিশ্বাস করে যে বেহেশতে ঢোকার আগে বিচারের মুখোমুখী হতে হবে আর যদি তাই হয় আপনি এখন যাদের সাথে অন্যায় করছেন, তাদের সাথেও তো আপনার সেখানে দেখা হবে এবং পৃথিবীতে আপনার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েও যারা ফল পান নি, তারা সেখানে নালিশ জানালে আপনার বেহেশতে প্রবেশের জন্য কি কিছুটা সমস্যা হবে? সে তখন দেখা যাবে বলে যারা অন্যায় করে চলেছেন আবার ধর্ম পালনকারীর সামাজিক তকমাও লাগিয়েছেন, কিংবা ভাবছেন ধর্ম পালনের মধ্যে দিয়ে আপনাদের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, তারা আসলেই মহান এবং মহাজ্ঞানী ! তাই এইসব মহাজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে নালিশকারীদেরও একত্রিত হয়ে মহাশক্তি নিয়োগ করা উচিত এই পৃথিবীতেই !!
সাম্প্রদায়িকতা অনেকাংশেই স্বার্থান্নেষী মহলের জায়গা-জমি বা দেশ দখল কিংবা ক্ষমতাধর কোনো রাষ্ট্রনেতা. ধর্মীয়নেতা বা নিতান্তই নেতা হবার লোভে ধৈর্যসহ দীর্ঘ আলোচনার পথে না গিয়ে তড়িঘড়ি অসচেতন মানুষদেরও কিছু পাবার লোভ দেখিয়ে এক অনন্ত কালো আঁধার তৈরী করা ছাড়া আর কিছুই নয় | পৃথিবীর ইতিহাসে এর উদাহরণ ভুড়ি ভুড়ি | তাই সাম্প্রদায়িকতা এইসব ব্যক্তি বা মহলের কাছে প্রিয়ও বটে! এই স্বার্থান্নেষী মহল দেশের বাইরের কোনো শক্তিও হতে পারে যারা দেশের ভেতরের স্বার্থান্নেষী মহলের মাদ্ধমে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে | যে কোনো দেশে সংখ্যালঘুরা এদেরই টার্গেট হয়ে থাকে এবং প্রতিটি দেশে এদের দ্বারাই তাঁরা নির্যাতিত হয়ে থাকে | শুধু সংখ্যালঘুই বা বলি কেন, সমাজে যারা দুর্বল, তারাও এই নির্যাতন ভোগ করে থাকে | কোনো দেশের ভবিষ্যত অবস্থা আঁচ করে অনেকেই দেশত্যাগ করতে পারে, করেও | দেশের অনেক মেধাবী ছাত্রও তাই বিদেশে পাড়ি জমায়,সংখ্যালঘুরাও অন্য দেশে তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করে | এখন কোনো দেশের সৎ সরকার ও সংখ্যাগুরুর সৎ ও উদার অংশ এগুলোকে আমলে এনে সুষ্ঠ ব্যবস্থাদি নেবেন | এসব ব্যবস্থা না নেবার ফলেই, সার্থান্নেষী মহলের চাপে পড়ে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র তার বর্ণ হারায় |
প্রিয়া সাহা যে বিভাজন করেছেন সে ব্যাপারে আমরা একমত কিন্তু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কি মুসলিম সহ অন্নান্য ধর্মের সাথে বিভেদ তৈরী করছে না? এছাড়া এটা তো বোকামি বলেও মনে হয় কেননা সংখ্যাগুরুদের প্রগতিশীল অংশকে সাথে রাখলে তো দাবি আদায়ে সুবিধাই হতো আর গো-মাংস ভক্ষণকারী ক্রিশ্চিয়ানরা যদি সাথে থাকতে পারে, মুসলিমরা নয় কেন | এছাড়াও ধর্মীয় দর্শন অনুযায়ী যদি সব মানুষ সমান হয় তবে অন্তত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে না হোক মানসিক ভাবে তো সবাই সবাইকে একাত্মা হিসেবেই দেখা উচিত | আর যদি তা না পারি তবে ধর্মকে বা ধর্মের সমস্ত মানবিক এবং শ্রেষ্ঠ দর্শনগুলো না আওড়ানোই ভালো | মুখে এক আর অন্তরে আর এক ভন্ডামীই প্রমান করে শুধু | এই উপমহাদেশ সহ পৃথিবীর ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে বিভেদ, বর্ণবাদ, সাময়িক ধর্মীয়-শ্রেষ্ঠত্ববাদ আর জাত পাতের ইতিহাস | ব্রাম্মন-ক্ষত্রিয়-শুদ্র কিংবা শিয়া-সুন্নি-কাদিয়ানী, ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট, ক্যাথলিক-প্রোটেস্ট্যান্ট, শ্রেষ্ঠত্বের দাবিতে যে কোনো ধর্মের বিপরীতে অন্য ধর্মের তুলনা ইত্যাদি তাই প্রমান করে | ঈশ্বরের বৈচিত্রপ্রিয়তার মুগ্ধতা এখানে নেই আছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাস্প, নোংরা আঁধার | প্রকৃত উদার ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষেরা এসব নোংরা আঁধার দূরে রাখেন, তাঁরা হন প্রদোষে- প্রাকৃতজন, চোখে শুভ্রতা নিয়ে দিগন্তে হেঁটে যান |
.......সময় অনেক গেছে, এখন আমাদের দার্শনিক পরিপক্কতা দরকার | এসব বিষয় সমাজের সচেতন ও উদার প্রগতিশীল মানুষেরা জানে ও পালনও করেন কিন্তু সমগ্র জনগোষ্ঠীকে এই বিষয়ে শিক্ষিত করতে না পারলে ১৯৪৭ বা ৭১ বারবার আসবে | এই শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্ব সরকার সহ জনকল্যাণকামী সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও ধর্মীয় দলসমূহের | শুধু ধর্মীয় উদারনৈতিকতারই শিক্ষা নয়, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টিকারী স্বার্থান্নেষী মহল সম্পর্কে তাদের সজাগ করা ও প্রতিহত করা যে কোনো সরকারের সৎ অংশ এবং রাজনৈতিক দলের সৎ অংশের কিংবা প্রকৃত জনকল্ল্যাণমুখী সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলির দায়িত্ব | কেননা আম-জনতা এবং সৎ সরকারের সবাই শান্তিপ্রিয় এবং উদার, শুধুমাত্র কিছুসংখক লোভী ভূমিদস্যুর কারণে অশান্ত হয়ে ওঠে দেশ, জাতি, সমাজ | এই ভূমিদস্যুরা শুধু সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগুরুর "দুর্বল সংখ্যাগুরুদের" জায়গা-জমিও হরণ করে বৈকি | বোধকরি, এ ব্যাপারে উদাহরণ দেবার প্রয়োজন নেই! এইসব ভূমিদস্যু, সরকারের অসৎ অংশের যোগসাজশে মিথ্যা কাগজপত্র তৈরির মাদ্ধমে জায়গা-জমি গিলে খায় | তাই অনেকসময়ই আপনি ধরতে পারবেন না, কোথা থেকে কি হলো !!
তাই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সহ অন্নান্য সমস্ত ধর্মের ধর্মীয় দলগুলিকে আহব্বান করবো, আসুন একসাথে চলি | সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর পরস্পরের প্রতি কৃত প্রকৃত সত্য অভিযোগ গুলি আমলে আনি ও আলোচনার মাদ্ধমে সমাধানে পৌঁছাই | আর মনে রাখতে হবে, পূর্বে উল্লিখিত কিছু সার্থান্নেষী মহলের কারণেই এসব অভিযোগ তৈরী হয় | বিভেদ সৃষ্টি না করে ঈশ্বরের বৈচিত্রপ্রিয়তা অনুভব করি কিন্তু একইসঙ্গে সবাইকে অন্তত মানসিক ভাবে ব্রাদার ভাবি | বৈচিত্র্য সঙ্গে নিয়েই যার যার ধর্ম পালন করি আর উৎসবে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলাই | আর যেহেতু তাঁর ইশারা ছাড়া একটি পাতাও নড়ে না, তাই এই বহুধা ধর্মীয় বিভক্তির বৈচিত্রতা তাঁর অঙ্গুলি হেলনেই হয়েছে।সুতরাং প্রতিটি ধর্মের ঈশ্বরের আরাধনার অদ্ভুত প্রশান্তিময় চিত্রগুলি আমাদের একাত্মতারই বহিঃপ্রকাশ বই কি !
আর একটি কথা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর কাছে নোবেল বিজয়ী কিন্তু ভয়ানক ভাবে নির্যাতিতা ইরাকী মুসলিম ইয়াজেদি নারী নাদিয়া মুরাদ এর বক্তব্য শুনুন এই লিংকে - https://tinyurl.com/y628lc44 | যেসব শিক্ষিত তরুণ কিংবা পেশাজীবীরা ISIS -কে ইসলামের জেহাদি কান্ডারি বলে মনে করছেন, তাঁরা হয়তো মত পাল্টাবেন ও অসচেতন নাগরিকদের এ ব্যাপারে সচেতন করবেন | ইয়াজিদি মুসলিমরাও কিন্তু সেখানে সংখ্যালঘু ! স্বীকার বা অস্বীকার যাই করা হোক, এটাই বাস্তবতা যে সংখ্যালঘুরা পৃথিবীর যে কোনো দেশেই কম-বেশী কিছু না কিছু বৈষম্যের স্বীকার কেননা মানুষের প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা ঢের বাকি !
ইদানিংকার ISIS কিংবা খ্রীষ্টান সুপ্রিমেসিস্ট আক্রমণ কিংবা জয় শ্রী রাম বা বার্মার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ধর্ম ও জাতীয়তার নামে অস্ত্রহীন নিরীহ মানুষদের ওপর যেসব অস্ত্র-সন্ত্রাস করছে বা করেছে তা নির্লজ্জ কাপুরুষতা যা কখনোই কাম্য হতে পারে না | যুদ্ধ হতে হবে সমানে সমান এবং সঠিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে | নিরীহ মানুষকে মেরে প্রতিশোধ নেওয়া বা দাবি আদায় বা বীরত্ব ফলানো , ঘৃণা ছড়ানো সবই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও দর্শন এবং নীতি-নৈতিকতার দিক থেকে অনন্ত পাপাচারের কাজ | আমাদের উচিত সকলে মিলে এসব প্রতিরোধ করা ও এদের বিরুদ্ধে কথা বলা কিংবা এদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা | আবারো সরকার ও সমাজের সচেতন অংশ ও ধর্মীয় দলগুলোকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলবো |
আরো দেখুন -: একটি "মহান প্রেমময় ভ্রাতৃত্বের বিশ্ব" তৈরি করার জন্য "বিশ্ব নেতাদের" প্রতি খোলা চিঠি
